দু হাজার বছর আগের এক গ্রীক দার্শনিক বিশ্বাস করতেন দর্শনের জন্ম মানুষের বিস্মিত হওয়ার ক্ষমতার মধ্যে । বেঁচে থাকাটা এতো আশ্চর্য বলে বোধ হয়েছিল মানুষের কাছে যে আপনা থেকেই দার্শনিক প্রশ্নগুলো জেগে উঠেছিল তাদের মনে ।
ব্যাপারটা অনেকটা একটা জাদুর খেলার মত, আমরা আমরা ঠিক বুঝতে পারি না কাজটা কীভাবে করা হল । কাজেই আমরা জিজ্ঞেস করিঃ জাদুকর কী করে কয়েকটা সাদা সিল্কের স্কার্ফকে একটি জ্যান্ত খরগোশে রূপান্তরিত করতে পারেন ?
একজন জাদুকর যখন হঠাৎ করে একটা খরগোশ বের করে আনেন একটা টুপির ভিতর থেকে - যে টুপিটা কিনা একটু আগেই খালি হিসেবে দেখান হয়েছিল - তখন সবাই অবাক হয়ে যায়, অনেক মানুষী ঠিক সে-রকম অবিশ্বাস নিয়ে পৃথিবীর বুকে জীবনযাপন করে ।
খরগোশের বেলায় আমরা জানি যে জাদুকর আমাদের ধোঁকা দিয়েছেন । আমরা কেবল জানতে চাইব কাজটা কীভাবে করা হল। কিন্তু পৃথিবীর বেলায় ব্যাপারটা একটু ভিন্ন। আমরা জানি পৃথিবীটা মোটেই হাত সাফাই আর ধোঁকার বিষয় নয়, তার কারণ আমরা এই পৃথিবীরই বাসিন্দা, আমরা এরই অংশ ! আসলে আমরা হচ্ছি টুপির ভেতর থেকে টেনে বের করা সেই সাদা খরগোশ। সাদা খরগোশ আর আমাদের মধ্যে একমাত্র পার্থক্য হচ্ছে খরগোশটা উপলব্ধি করে না যে সে একটা জাদুর খেলায় অংশ নিচ্ছে । আর আমরা করি । আমরা অনুভব করি রহস্যময় একটা কিছুর আমরা অংশ এবং আমরা জানতে চাইব এগুলোর সব কীভাবে কাজ করে ।
পুনশ্চঃ সাদা খরগোশটার ক্ষেত্রে সেটাকে গোটা মহাবিশ্বের সঙ্গে তুলনা করাই সঙ্গত হবে , আমরা যারা বাস করি তারা হচ্ছি খরগোশের গায়ের রোমের গভীরে বাস করা আণুবীক্ষণিক পোকামাকড়। কিন্তু দার্শনিকরা সব সময় চেষ্টা করে যাচ্ছেন সেই মিহি রোম বেঁয়ে উপরে উঠে সরাসরি জাদুকরের চোখে চোখ রাখতে !
~~~ সোফির জগৎ ~~~
~ ইয়স্তেন গার্ডার ~
~ অনুবাদকঃ - জি এইচ হাবীব ~
No comments:
Post a Comment